24.4 C
Chittagong
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫
spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদঅর্থ-বাণিজ্য৪৩ বিলিয়ন ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশ

৪৩ বিলিয়ন ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশ

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক :

বাংলাদেশে বড় বড় মেগা প্রকল্পের নামে নেওয়া বিদেশি ঋণ এখন দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

সরকারের আমলে বাস্তবায়িত ২০টি মেগা প্রকল্পের জন্য নেওয়া ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

কর্ণফুলী টানেল থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রকল্প থেকে কাঙ্ক্ষিত সুফল না আসায় ঋণ পরিশোধের চাপ আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

২০২৩ সালের শ্বেতপত্র অনুযায়ী, ২০২৮ সালে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধের পরিমাণ তিন গুণে পৌঁছাবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে, যা রাজস্ব আহরণ ও রেমিট্যান্স আয়ের সীমাবদ্ধতার কারণে চাপ আরও বাড়াবে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০টি মেগা প্রকল্পে নেওয়া ঋণের বড় অংশ রাশিয়া (৩৬.৬%), জাপান (৩৫%), এবং চীনকে (২১%) পরিশোধ করতে হবে। এর বাইরে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থার ঋণের কিস্তিও রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “কিছু প্রকল্প যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিদেশি ঋণ নিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যা অর্থনীতিতে সুফল আনতে পারেনি।”

উদাহরণ হিসেবে তিনি রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা উল্লেখ করেন, যা গ্যাস সংকটের কারণে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারছে না।

এছাড়া চীনের অর্থায়নে নির্মিত কর্ণফুলী টানেলের ঋণ পরিশোধ প্রকল্প উদ্বোধনের আগেই শুরু হয়েছে। ২ শতাংশ সুদে নেওয়া ৬ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প এখন সরকারের জন্য “গলার কাঁটা” হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা সেতু রেল সংযোগসহ একাধিক মেগা প্রকল্পের কিস্তি পরিশোধের সময় শুরু হওয়ায় ঋণের বোঝা আরও বাড়ছে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সতর্ক করে বলেছেন, “ঋণ পরিশোধের বোঝা মোকাবিলায় রাজস্ব বৃদ্ধি ও অর্থনীতির দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভবিষ্যতে বিদেশি ঋণ গ্রহণে আরও স্বচ্ছতা ও যাচাই-বাছাই প্রয়োজন।

অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, জনগণের করের অর্থ দিয়ে ঋণ পরিশোধের বোঝা আরও দীর্ঘমেয়াদি চাপ তৈরি করবে।