চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে অবৈধ বসতি বেড়েই চলেছে। বন্দরনগরীর ২৮টি পাহাড়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে অন্তত ৮ শতাধিক পরিবার। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষাকালে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা জেগেছে। জেলা প্রশাসন দুই দফা উচ্ছেদ অভিযান চালালেও এই চিত্রে পাল্টাচ্ছে না। পাহাড়ের ভাঁজে বসবাসকারীরা বলছেন উচ্ছেদের আগে তাদের প্রয়োজন স্থায়ী পুনর্বাসন।
চট্টগ্রামের ২৮টি পাহাড়ের মধ্যে ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ। যার ৭টি সরকারি এবং ১০টি ব্যক্তি মালিকানাধীন। এসব পাহাড়ের উপরে এবং পাদদেশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বসতঘর। যেখানে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে প্রায় ৮শ পরিবার। পুনর্বাসন ছাড়া এসব বসতি ছাড়তে নারাজ এখানে বসবাসকারী নিম্নআয়ের মানুষ। এমনকি কাজে আসছে না উচ্ছেদ অভিযানও।
চলতি বর্ষা মৌসুমের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টির কারণে বেড়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। গত সপ্তাহে এ কে খান ও মতিঝরনা পাহাড়ে জেলা প্রশাসন দুই দফা উচ্ছেদ অভিযান চালালেও পাল্টায়নি চিত্র। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানি নিয়মিত ঘটনায় রূপ নিয়েছে। পাহাড় ধস আর কিংবা উচ্ছেদ অভিযান নিয়মিত চললেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ৩৬ দফা সুপারিশের একটিও। শাস্তির আওতায়ও আনা হচ্ছে না দখলদারদের। ফলে স্থায়ী কোনো সমাধান আসছে না বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।
পাহাড় দখল এবং অবৈধ বসতি বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, সাময়িক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কার্যকর সমাধানে আসা সম্ভব হবে না। এক বছর কিংবা দুই বছর যত সময়ই লাগুক স্থায়ীভাবে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। সরিয়ে আনার পর পাহাড় রক্ষা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ওই জায়গাগুলোকে ব্যবহার করতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনামুল হাসান বলেন, শুধু বর্ষা নয় সারাবছরই এই উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ শতাধিক। এর মধ্যে ২০০৭ সালের ১১ জুন একদিনেই প্রাণ যায় ১২৭ জনের।