তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রাণীকুলের মধ্যে ব্যাঙ খুব ছোট, কিন্তু তাদের আওয়াজ খুব বড়। রাজনীতির মধ্যেও কিছু ব্যাঙ আছে। কিছু ছোট ছোট রাজনৈতিক দল আছে তাদের দেখি আওয়াজ খুব বড়।
বিএনপির সাথেও এধরণের কিছু রাজনীতির ব্যাঙ আছে। এসব ছোট রাজনৈতিক দল গুলোর আওয়াজ খুব বড়। রাজনীতির ব্যাঙদের আওয়াজ এখন খুব বড় হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের হাঁকডাক এখন নির্বাচনী প্রচারণার মধ্যেই ঢাকা পড়ে গেছে। তাদের এই নির্বাচন বর্জনের ডাকে এখন কেউ আর সাড়া দেয়না, এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীরাও সাড়া দেয়নি।
বিএনপি’র অনেক নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, বিএনপির নেতারা বের হয়ে তৃণমূল বিএনপি গঠন করেছে। আমাদের এখানেও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) আসনের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান-মেম্বার, মেয়র ও কাউন্সিলরদের সাথে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে পৌরসভায় অ্যডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে দেশে একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হযেছে। গ্রামে-গঞ্জে হাঁটে মাঠে-ঘাটে সব জায়গায় আজ নির্বাচনের আলোচনা।
নির্বাচনের ঝড় এখন সমগ্র বাংলাদেশে শুরু হয়ে গেছে। সমগ্র বাংলাদেশে বিএনপি’র শত শত নেতা আজকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, নির্বাচনের সাথে যুক্ত হয়েছে।
তাদের নির্বাচন বর্জনের যে ডাক সেটি ভন্ডুল হয়ে গেছে। এখন তারা দেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ঢাকায় একটি ট্রেনের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুন জ্বালিয়ে চারজন মানুষকে হত্যা করেছে। একজন মা মৃত্যুর মধ্যেও সন্তানকে বুকে আগলে রেখেছে, বুক থেকে অঙ্গার হয়ে যাওয়া সন্তানকে সড়ানো যাচ্ছে না। এই ধরণের বিভৎসতা কোন রাজনৈতিক দল করতে পারে না, যেটি বিএনপি করছে। পৃথিবীর কোথাও এগুলো ঘটছে না।
সুতারাং, এই বিএনপি আর জনগণের কাছে আসার কোন সুযোগ নেই। আমরা আগুন সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। এখন বিএনপি নেতাদেরও দেখা যাচ্ছে না। তারা ঢাকা শহরে নাকি লিফলেট বিলি করছে।
আজকে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ, এদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাচ্ছে। আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে জনগণের শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। এদের নির্মূল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি যাদের উপর ভরসা করেছিল তারাও বলছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কদিন আগে জাতিসংঘ বিবৃতি দিয়েছে, নির্বাচনে যাতে সবাই ভোট দিতে পারে। তার মানে বিএনপি যে নির্বাচনে বাঁধা দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই তারা সেটি বলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হওয়া দরকার, আমরা সেটাই করতে চাই, সেটিতে বাঁধা দিচ্ছে বিএনপি। আমরা আশা করবো ভিসা নীতি যেটি ঘোষণা করা হয়েছে, বিএনপিসহ যারা এই নির্বাচনে বাঁধা দিচ্ছে, তাদের উপরই এই ভিসা নীতি যেন প্রয়োগ করা হবে, ইনশাল্লাহ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, জনপ্রতিনিধিরাই সমাজের স্বাভাবিক নেতা। নির্বাচন উপলক্ষে তাই আমি প্রথম বৈঠকটি আপনাদের দিয়েই শুরু করেছি। জনপ্রতিনিধিরাই কারো বাড়ির উঠানে, চায়ের দোকানে মাঠে-ঘাটে ও মসজিদের আঙ্গিনায় থাকেন। আপনারা যেকথাটি মানুষকে বলবেন, সেটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। আপনারাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে বার্তা পৌঁছানোর কাজটি করেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আমি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা এবং নিষ্ঠা দিয়ে চেষ্টা করেছি এলাকার মানুষের পাশে থাকা এবং এলাকার উন্নয়ন করার জন্য। চেষ্টা করেছি সব মানুষের এমপি হওয়ার জন্য।
গত ১৫বছর সবার জন্য আমার দুয়ার খোলা ছিল। কে আমাকে ভোট দিয়েছিল, কে দেই নাই, ভবিষ্যতে কে দিবে কিংবা দিবে না, সেটি আমি মাথায় রাখিনা। যেই আমার কাছে আসে চেষ্ঠা করি উপকার করার।
গত ১৫টি বছর সব মানুষের জন্য আমার দরজাটি খোলা রেখেছি। কে আমাকে ভোট দিয়েছিলো কিংবা দেয়নি কিংবা ভবিষ্যতে দেবে না তা আমি কখনো ভাবিনি। অন্তত চেষ্টা করি কথা দিয়ে হলেও শান্তি দেয়ার। এভাবেই সবসময় চেষ্টা করেছি।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইফতেখার হোসেন বাবুল, জহির আহমদ চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান নুর কুতুবুল আলম, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, এম এ মান্নান চৌধুরী, ফজলুল কবির গিয়াসু, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার, দানু মিয়া, আবু জাফরসহ ইউপি সদস্যগণ বক্তব্য রাখেন।