এর আগে কূটনৈতিক পরিসরে সামরিক প্রভাব নিয়ে সমালোচনা করে তার একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ওই ফাঁস হওয়ার ঘটনায় অভ্যন্তরীণ কলহে আমি অনুতপ্ত।’
ইতিমধ্যে দেশটির রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে।
এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, কূটনীতি ও সামরিক বাহিনীর কাজে সমন্বয় নিয়ে গোপন তাত্ত্বিক আলোচনা অন্তঃকলহে রূপ নেওয়ায় আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে আলোচনায় সৎ ও আবেগপ্রবণ যুক্তি ব্যক্তিগত সমালোচনা হিসেবে হাজির হয়েছে। তবে ওই ফাঁস হওয়া অডিওতে তিনি যে যুক্তি দিয়েছিলেন, তাতে এখনও অনড় রয়েছে।
অডিওতে তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতিতে কখনো কখনো তার নিজের প্রভাব শূন্য বলে মনে হয়েছে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন সোলাইমানি। ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে বিপ্লবী গার্ডসের প্রভাবের সমালোচনা খুবই বিরল ঘটনা।
কেউ কেউ বলছেন, জাভেদ জারিফের সুনামহানি করতেই এই অডিও রেকর্ড ফাঁস করা হয়েছে। আবার কারো দাবি, ইরানি পররাষ্ট্রনীতিতে নিজের ব্যর্থতা থেকে রেহাই পেতে চেষ্টা করছেন তিনি।
এমন এক সময় এই অডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যখন ২০১৫ সালে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তির বিচক্ষণতা নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে।
ওই চুক্তি উদ্ধারে ইতিমধ্যে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ আলোচনা হয়েছে এবং চলতি সপ্তাহে সরাসরি আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
সাত ঘণ্টার ওই সাক্ষাৎকার সত্যি বলে স্বীকার করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু আগামী জুনে ইরানি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তা প্রকাশ করার কথা ছিল না।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কিছু উদ্ধৃতি বিকৃত করা হয়েছে। সোলাইমানিকে নিয়ে জারিফের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক বলে তুলে ধরতে চেষ্টা করা হয়েছে।
জাভেদ জারিফের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সংস্কারবাদী অর্থনীতিবিদ ও সাংবাদিক সাঈদ লেইলাজ।
সাক্ষাৎকারে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্রনীতিতে বিপ্লবী গার্ডসের চাপিয়ে দেওয়া প্রভাব ঠাণ্ডা যুদ্ধের মতো। আইআরজিসির সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে এত বেশি সময় দিয়েছেন, যা তিনি অন্য কোথাও দেননি। কূটনীতিতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রভাব অনেক বেশি, যতটা না নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কূটনীতির প্রভাব।
অভিযোগ করে জারিফ বলেন, ইরানে একটি গোষ্ঠী আছে, যারা সবকিছু নিরাপত্তার চোখ দিয়ে দেখে।
তার দাবি, বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি ব্যাহত করতে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন গোষ্ঠী সৌদি দূতাবাসে হামলাসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। চুক্তিতে যাতে রাশিয়ার সমর্থন না থাকে, তা নিশ্চিত করতে চুক্তির পর সোলাইমানি মস্কো সফর করেছিলেন।
সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদকে এভাবে প্রকাশ্যে সমর্থন না দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ রাখেননি সোলাইমানি। এছাড়া সিরিয়ায় পণ্য পরিবহনে ইরানের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন ব্যবহার না করতেও অনুরোধ করা হয়েছিল।