স্টাফ রিপোর্টার : সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণের অভিযোগে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় দেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণ খেলাপি চট্টগ্রামের নুরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শিল্পপতি জহির আহমেদ রতনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি টিম রতনকে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।সিএমপির কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোতোয়ালী থানায় ১৮টি মামলায় জহির আহমেদ রতন বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা আছে। আরও ছয়টি মামলায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। এর সবগুলোই খেলাপি ঋণের অভিযোগে দায়ের করা মামলা। তিনি আরো বলেন, এর বাইরে অন্য কোনো থানায় আর কোনো পরোয়ানা আছে কি না সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।
গ্রেফতার বিষয়ে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এস এম ওবায়দুল হক জানান, সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ঋণের অর্থ পরিশোধ না করে আত্মগোপনে চলে যান জহির আহমেদ রতন। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আসামী রতনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত মামলার শুনানী শেষে আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান পূর্বক পরোয়ানা জারি করেন। বিজ্ঞ অর্থঋণ আদালত আসামীকে দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। তিনি সাজা থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। তার বিরুদ্ধে সিএমপির কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ, পাহাড়তলী ও খুলশী থানায় মোট ২৬টি সিআর সাজা ও ৩৫টি সিআর গ্রেফতারী পরোয়ানা সহ ৬১টি গ্রেফতারী পরোয়ানা মূলতবী রয়েছে।
জানা গেছে, ভোজ্যতেল পরিশোধনসহ বিভিন্ন খাতের একাধিক কারখানা আছে নুরজাহান গ্রুপের। গম ও অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিও করে থাকে এ শিল্পগ্রুপটি। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ পায় নুরজাহান গ্রুপ। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে এ গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পাওনা আদায়ে ব্যাংকগুলো জহির আহমেদ রতনের বিরুদ্ধে অন্তত ৩০টি মামলা করেছে। অভিযোগ আছে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দায় পরিশোধ করে না করে নুরজাহান গ্রুপ বিভিন্ন কারখানা স্থাপন, জমি কেনা এবং বিভিন্ন উপায়ে বিদেশে পাচার করেছেন। ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানা পুলিশ নুরজাহান গ্রুপের পরিচালক ও জহির আহমেদ রতনের ছোট ভাই টিপু সুলতানকে গ্রেফতার করেছিল।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতে শুক্রবার আদালতে হাজির করা হবে বলেও জানান কোতোয়ালী থানার ওসি ওবায়দুল হক।