বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ মুখোমুখি হয় দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। ফাইনালের আগে এ যেন আরেক ফাইনাল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে। এমন ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াইয়ে ম্যাচের শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে ভারত। এরপর আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি ম্যান ইন ব্লুরা। শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় রোহিত শর্মার দল।
ভারতের দেওয়া ১২০ রানের লক্ষ্য অনেকই মনে করেছিল অনায়াসেই জয় পাবে পাকিস্তান। তবে দলটা পাকিস্তান- আনপ্রেডিক্টেবল তকমা নিয়েই থাকে তারা।
এই ম্যাচেই যেনো তার আরেকবার ছায়া দেখলো ক্রিকেট প্রেমীরা। লো স্কোরিং থ্রিলারের ম্যাচে পাকিস্তানকে আটকে দিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
স্বল্প রানের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ম্যান ইন গ্রিনদের ৬ রানে হারিয়ে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ভারত। এদিকে চলমান আসরে টানা দুই হারে অলিখিত ভাবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে পাকিস্তান।
ভারতের দেওয়া ১২০ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
অল্প রানের তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করেও দলীয় ২৬ রানে ১০ বলে ১৩ রান করে আউট হন বাবর। এরপর বাইশ গজে ব্যাট হাতে আসেন উসমান।
তাকে সঙ্গে নিয়ে দেখে শুনে খেলতে থাকেন রিজওয়ান। ধীরগতিতে রানের চাকা সচল রাখে এই দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৫৭ রানে উসমানকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখান অক্ষর প্যাটেল। ১৫ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফিরে যান উসমান।
এরপরই ছন্ন ছাড়া হয় পাকিস্তান। স্কোরবোর্ডে ২৯ রান যোগ করতেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে ম্যান ইন গ্রিনরা। ফকর জামান ৮ বলে ১৩, রিজওয়ান ৪৪ বলে ৩১ ও শাদাব খান ৭ বলে ৪ রান করে আউট হন। সেখান থেকে ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে যায় ভারত।
তবে ইফতিখার ও ইমাদ ওয়াসিম মাঝে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলো। কিন্তু দলীয় ১০২ রানে ৯ বলে ৫ রান করে আউট হন ইফতিখার। এরপর ম্যাচ থেকে একবারেই ছিটকে যান বাবরা। শেষ দিকে ভারতীয় নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান করে পাকিস্তান।
তাতে ৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রোহিত শার্মার দল। আর এই হারে চলমান আসর থেকে অলিখিত ভাবে ছিটকে গেছে পাকিস্তান। কেননা এই গ্রুপে থাকা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পয়েন্ট ৪। আর ২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে কানাডা।
ফলে বাকি ২টি ম্যাচে জিতলে পাকিস্তানের সুপার আটের যাওয়া সম্ভবনা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র যদি দুই ম্যাচই হারে সেক্ষেত্রে রান রেটের হিসেব বসবে তখন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভারতের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। প্রথম ওভার থেকে ৮ রান সংগ্রহ করে টিম ইন্ডিয়া। মাঠে ১ ওভার গড়ালে ফের বৃষ্টি বাধায় বন্ধ থাকে ম্যাচ।এরপর স্থানীয় সময় ১২টার কিছু আগে মাঠে নামে ক্রিকেটাররা।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে নাসিম খানের করা প্রথম বলেই চার হাঁকান কোহলি। তবে এক বলের ব্যবধানে আউট হন তিনি। উসমান খানের তালুবন্দী হওয়া কোহলির সংগ্রহ সাকুল্যে সেই ৪ রান। কোহলি সাজঘরে ফিরলে উইকেটে আসে ঋষভ পান্থ। তাকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন অধিনায়ক রোহিত।
তবে কোহলির পর উইকেটে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি ম্যান ইন ব্লুদের অধিনায়কও। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। যাবার আগে ১২ বলে ১৩ রান করেন রোহিত। এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন অক্ষর প্যাটেল।
তাকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন পান্থ। দুই জন মিলে ৩৯ রানের জুটি গড়েন। তবে এই জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি দলীয় ৫৮ রানে নাসিম শাহর বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন অক্ষর। যাবার আগে ১৮ বলে ২০ রান করেন তিনি।
এরপর চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে নামেন সূর্যকুমার যাদাব। তবে উইকেটে বেশিক্ষন থিত হতে পারেননি তিনিও। নিজের নামের পাশে ৭ রান যোগ করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। একপ্রান্ত আগলে লড়ে যাচ্ছিলেন পান্থ। তাকে ৪২ রানে পরাস্ত করেন মোহাম্মদ আমির। পরের বলে জাদেজাকেও ফেরান এ পেসার।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে রোহিত শর্মার দল। এ অবস্থায় চাপে পড়েছে টিম ইন্ডিয়া। এরপর ভারতের হয়ে আর কেউই ম্যাচের হাল ধরতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানে অলআউট হয় ভারত।