দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব আইন অনুযায়ী দাখিল ও ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে রিট দাখিল করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সোমবার এ রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিপুল সম্পত্তি অর্জনের বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে এসব কর্মকর্তা এবং তার স্ত্রী ও সন্তানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির তালিকাও দেওয়া হয়েছে।
যেখানে দেখা গেছে, অনেক সরকারি কর্মকর্তা শত শত একর জমির মালিক। শুধু জমিই নয়, বানিয়েছেন রিসোর্ট। এছাড়া বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বিনিয়োগ করেছেন শেয়ার বাজারসহ নানা ব্যবসায়। এমনকি বিদেশেও অর্থ পাচার করে সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এসব প্রতিবেদন জনগণের মধ্যে স্পষ্টত ধারণা দেয় যে, দেশে দিনে দিনে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে। আবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে।
কিন্তু এসব আইনের কার্যকর প্রয়োগ না হওয়ায় দুর্নীতি ও অর্থ পাচার আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। তাই অর্থ পাচার ও দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তার এবং পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। কিন্তু সম্পত্তির হিসাব জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা প্রকাশের কোনো বিধান নেই।
এজন্য সংশ্লিষ্ট আইন করে দাখিলকৃত সম্পদের হিসাব প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া। কারণ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হয় জনগণের করের টাকায়। এজন্য তাদের সম্পত্তির তথ্য জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস জানান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আইনে উল্লেখিত যথাযথ নিয়মে কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
এর কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি যে সরকারের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা কিভাবে এত বিপুল সম্পদ অর্জন করেন, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, সরকারের একটি কন্ডাক্ট রুল আছে। এ নীতি অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা সরকারের অনুমতি ছাড়া বিনিয়োগ, ধার কিংবা ভবন পর্যন্ত নির্মাণ করতে পারেন না।
এছাড়া চাকরিতে নিয়োগের শুরুতে তাদের সম্পদের বিবরণী দেয়ার পাশাপাশি প্রতিবছর সম্পদের হিসাব জমা দিতে হয়। তাহলে কিভাবে তারা এতো কিছু করলেন।