23.2 C
Chittagong
সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদখেলাধুলাসুপার এইটের পথে বাংলাদেশ,বিদায় শ্রীলঙ্কা!

সুপার এইটের পথে বাংলাদেশ,বিদায় শ্রীলঙ্কা!

খেলাধুলা ডেস্ক :

কাগজে-কলমে ক্ষীণ একটি সম্ভাবনা বেঁচে ছিল। সেজন্য বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু বৃষ্টি শেষ পর্যন্ত ‘ধোঁকা’ই দিল তাদের।

চলমান বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে গেলেই বিশ্বকাপে টিকে থাকত শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেই সম্ভাবনা আর নেই।

নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সুপার এইটের পথে এগিয়ে গেলো টাইগাররা। তাতেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে শ্রীলঙ্কার।

গ্রুপ পর্বে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটি এখন কেবলই নিয়মরক্ষার তাদের জন্য। ডি গ্রুপে ৩ ম্যাচে স্রেফ এক পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে আছে তারা।

নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সুপার এইটের পথে এগিয়ে গেলো টাইগাররা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। ১৬০ রানের জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করে নেদারল্যান্ডস।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দেখে শুনে খেলতে থাকে ডাচরা। তবে টাইগার দলপতি শান্তর কৌশলে ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই উইকেট হারায় তারা। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন। তার বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে কাভারে হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন লেভিট।

তাসকিনের পর বল হাতে সাফল্য এনে দেন তানজিম। তার বলে টেনে খেলতে চেয়েছিলেন ম্যাক্স ও’ডাউড। তবে দারুণ রিফ্লেক্সে ফিরতি ক্যাচ নেন তানজিম। এতে পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ২ উইকেট হারায় ডাচরা।

ইনিংসের সপ্তম ওভারেই দলীয় ৫০ পূর্ণ করে ডাচরা। দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন বিক্রমজিৎ সিং ও সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। এরপর তাদের ৩৭ রানের জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার বলে ১৬ বলে ২৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বিক্রম।

এরপর নিয়মিত বাইন্ডারি আর দুর্দান্ত জুটিতে টাইগারদের হতাশা বাড়াতে থাকেন এডওয়ার্ডস ও এঙ্গেলব্রেখট। তবে এবার হুমকি হয়ে দাঁড়ান রিশাদ আহমেদ। তার অফ স্টাম্পের বাইরে টার্ন করা বলে লাইন মিস করেন এঙ্গেলব্রেখট।

লেগ খেলতে গিয়ে আউটসাইড-এজড ক্যাচ তুলে দেন। কাভারে সহজ ক্যাচ নেন তানজিম। এতে এডওয়ার্ডসের সঙ্গে ভাঙে তার ৩১ বলে ৪২ রানের জুটি। ২২ বলে ৩৩ রানে ফেরেন এঙ্গেলব্রেখট।

এক বল ব্যবধানেই বাস ডি লিডিকে ফেরান এই স্পিনার। রিশাদের টার্নে পরাস্ত হন ডি লিডি। লিটনের দুর্দান্ত স্টাম্পিংয়ে রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন এই ব্যাটার।

রিশাদের জোড়া আঘাতের পর সাকিবের ওভারে মাত্র ৫ রান নিয়েছিল ডাচরা। এরপর ডেথ ওভারে এসে ডাচদের ভোগান মোস্তাফিজ। তার বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন স্কট এডওয়ার্ডস। এই ওভার থেকে আসে মাত্র ১ রান।

শেষ ১২ বলে ৩৬ রান দরকার ছিল ডাচদের। তবে ৯ রানের বেশি নিতে পারেননি তারা। এতে ২৫ রানের জয়ে সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখলো বাংলাদেশ।

এর আগে, টস হেরে তামিমের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তনে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওপেনিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে ফেরেন টাইগার দলপতি।

এরপর শান্তর পথেই হাঁটেন লিটন। তিনে নেমে ২ বলে ১ রানে সাজঘরে ফেরেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আরিয়ানকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন। মিডউইকেটে ছুটে গিয়ে ড্রাইভে দুর্দান্ত এক ক্যাচে তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান এঙ্গেলব্রেখট।

জোড়া উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে পথ দেখান অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান এবং তরুণ ওপেনার তানজিদ। এই দুই ব্যাটারের দাপুটে ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫৪ রান তুলে লাল-সবুজেরা।

তবে ভালো শুরুর পরই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তানজিদ। ফন মিকেরেনের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে আশাহত হন তানজিদ। বেশি দূর এগোয়নি তার পুল।

মিডউইকেট সীমানার বেশ আগেই ডি লিডির মুঠোবন্দি হন এই ওপেনার। ২৬ বলে ৩৫ রানে থামলে ভাঙে সাকিবের সঙ্গে তার ৩২ বলে ৪৮ রানের জুটি।

এরপর ২৭ বল পর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন সাকিব। তবে অন্যপ্রান্তে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হৃদয়।

টিম প্রিঙ্গলের আন্ডার-কাটে জায়গা বানিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। তবে ব্যাট লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে বল। এতে ১৫ বলে ৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হৃদয়।

এরপর সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দায়িত্বশীল এক ইনিংসে দীর্ঘদিনের রানখরা কাটান সাকিবও। তবে সাকিবের ফিফটির পরই প্যাভিলিয়নে ফেরেন রিয়াদ। ফেরার আগে খেলেন ২১ বলে ২৫ রানের ইনিংস।

শেষ পর্যন্ত সাকিবের ৪৬ বলে অপরাজিত ৬৪ এবং জাকের আলির ৭ বলে ১৪ রানের ক্যামিওতে ১৫৯ রানের পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।

এদিকে একই গ্রুপে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার শুরুটা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬ উইকেটের হার দিয়ে। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে দুই উইকেটে হারে তারা। তাই সুপার এইটে নাম লেখানোর জন্য তাদের সমীকরণ ছিল জটিল।

কিন্তু নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর লঙ্কানদের বাদ পড়াটা ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। আগামী ১৭ জুন ডাচদের বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে তারা।

এদিকে ডি গ্রুপে ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে সুপার এইটে নাম লিখিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।