‘আমি যদি সুইসাইড করি বা আমার কোন কিছু হয় এর জন্য দায়ি আমার শাশুড়ি। উনি আমাকে মেন্টালি প্রেসার ক্রিয়েট করছেন এটা করার জন্য।
গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঠিক এভাবেই একটি মন্তব্য লিখে স্ট্যাটাস দিয়েছেন গৃহবধূ ফারহানা ইয়াছমিন রূপা (২৫)।
একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন এশিয়ান হাউজিং সোসাইটির জাকির ম্যানশনের ২য় তলার ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ থেকে গৃহবধূর রুপার ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পরদিন রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিহতের পিতা আবদুর রশিদ বাদী হয়ে সিএমপির পাঁচলাইশ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নিহতের স্বামী মারুফ মোহাম্মদ নাজবুল আলম (৩৮), শাশুড়ি ছাবেরা বেগম (৫৬), বেবি আক্তার (৪৫) ও ফরিদা বেগম (৪৩)কে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে পাচঁলাইশ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, মামলাটি তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে টেকনাফ এলাকার (বর্তমানে সদরঘাট আইস ফ্যাক্টরি এলাকার) আবদুর রশিদের কন্যা ফারহানা ইয়াছমিন রূপার সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় একই জেলার চকরিয়া (বর্তমানে পাঁচলাইশ শুলকবহর এলাকার) মৃত ফরিদুল আলমের ছেলে মারুফ মো. নাজবুল আলমের (৩৮) সাথে।
বিয়ের পর থেকেই নিহতের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবিতে রুপার উপর নির্যাতন চালাতো। রুপাকে তার বাবার ফ্ল্যাট স্বামীর নামে লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন।
এদিকে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আসামিরা ভিকটিমকে আবারও মানসিকভাবে নির্যাতন করে এবং গলায় ফাঁস দিয়ে মরে যেতে বলেন।
এসব অত্যাচার সইতে না পেরে এদিন বিকেল ৫ টায় শুলকবহর এলাকার নিজ বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরে খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছে রুপার মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।