চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ১০ নম্বর চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগমের অবৈধ সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
এরই মধ্যে তদন্তে পাওয়া অবৈধ সম্পদ ক্রোক করে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা। গত ২৫ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ ড. জেবুন্নেছা এ ক্রোক আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম আদালতে দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা হয়।
ওই মামলার তদন্তে পাওয়া আসামিদের সম্পদ ক্রোকের জন্য গত ১৫ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর বিশেষ জজ আদালতে আবেদন করি।
এরপর গত ২৫ জুলাই আদালত দুই আসামি মুজিবুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগম নূরীর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।
স্থাবর সম্পদ ক্রোকের বিষয়ে ২৮ জুলাই চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার ও বাঁশখালী উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসকে চিঠি দিয়ে মুজিবুল হকের পৃথক ২৫টি রেজিস্ট্রিমূলে কেনা জমি ও সম্পদ এবং তার স্ত্রী সাহেদা বেগম নুরীর ৭টি পৃথক রেজিস্ট্রিমূলে কেনা সম্পদ ক্রোকের বিষয়ে অবগত করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
আদালতের আদেশে এখন এসব সম্পদ ক্রোকের বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে জেলা রেজিষ্ট্রার এবং উপজেলা সাব রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
আদালতের আদেশে ক্রোককৃত সম্পদের মধ্যে জমি-জমার পাশাপাশি সিকদার ফিশারিজ অ্যান্ড পোল্ট্রির নামে থাকা সম্পত্তিও রয়েছে মুজিবুল হক চৌধুরীর।
আদালত আসামি মুজিবুল হক চৌধুরীর অসাধু উপায়ে অর্জিত ৬৭ লাখ ১৩ হাজার ৫৯১ টাকা এবং তার স্ত্রী সাহেদা বেগম নূরীর অর্জিত ৭০ লাখ ৯৯ হাজার ৬২২ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর চাম্বল ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগম নূরীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুল হক জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এটি দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অন্য মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুলের স্ত্রী সাহেদা বেগম নূরী জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ উপার্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এটিও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দ্বিতীয় মামলায় স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদ উপার্জনে সহযোগিতা করায় মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।